ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলাকারী কারা

অনলাইন ডেস্ক ::

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে শনিবার হামলার ঘটনা এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। বিএনপি বলছে, এ হামলার ঘটনায় অংশ নিয়েছেন স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপি কর্মীরাই এ হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপাচ্ছে। হামলার ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থানীয় থানায় কোনো মামলা কিংবা কেউ অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ফেনী পৌর বিএনপির সভাপতি আলাল হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী। একশজনের মতো ফেনীর মোহাম্মদ আলী এলাকায় ছিলেন। বাকি ৫০ জন লালপুর এলাকায়। তাদের মধ্যে ভিডিও ক্লিপ দেখে আমরা ৫০ জনকে শনাক্ত করতে পেরেছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শাকা, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হায়দার জর্জ, শর্শদী ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা মানিক, একই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি রিয়েল, জেলা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক শামীম, ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ, যুবলীগ নেতা সুমন মিয়াজী, যুবলীগ নেতা বেলাল মেম্বার ও মানিক।

ফেনী পৌর বিএনপির সভাপতি আলাল হোসেন আরও বলেন, ধর্মপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবু বকর সানি, সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন, যুবলীগের সহসভাপতি ওবায়দুল হক, শ্রমিক লীগ নেতা মানিক, ছাত্রলীগ সভাপতি রানা, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক, যুবলীগ নেতা সোহাগ, যুবলীগ নেতা ইমাম হোসেন, যুবলীগ নেতা পলাশ মেম্বার, মিজান মেম্বার, যুবলীগ নেতা রাসেল, মুন্না ও মাস্টারপাড়ার যুবলীগ নেতা কোহিনুর আলমের শতাধিক কর্মী বিভিন্ন স্থানে অংশ নেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

গাড়িবহরে হামলা প্রসঙ্গে ফেনী জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল জানান, ছাত্রলীগ-যুবলীগের ওপর দায় চাপানো বিএনপির পুরনো অভ্যাস। গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ভিপি জয়নাল এবং রেহানা আক্তার রানুর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফসল। এর সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নন। শান্ত ফেনীকে অশান্ত করতেই বিএনপি এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

হামলার বিষয়ে ছাত্রলীগের নাম আসায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হায়দার জর্জের বক্তব্য নিতে গতকাল তাকে ফোন করা হয়। তিনি মুঠোফোনটি রিসিভ করে সাংবাদিক জেনে কেটে দেন।

ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শাকা জানান, তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। ঘটনার সময় তিনি ফেনী শহরে পৌরসভায় অবস্থান করছিলেন।

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে বলে দাবি করেছেন ফেনী জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু তাহের। তিনি বলেন, দল থেকে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো ধরনের অভিযোগ করিনি। দলের সিদ্ধান্ত পেলে তিনি লিখিত অভিযোগ করবেন।

ফেনী জেলার পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার আমাদের সময়কে বলেন, পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও ঘটনার ব্যাপারে কেউ এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি।

ফেনী মডেল থানার ওসি রাশেদ খান চৌধুরী জানান, রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।

প্রসঙ্গত, শনিবার বিকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে ফেনীর দেবীপুরে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর এলে দুর্বৃত্তরা এতে হামলা করে। এতে গণমাধ্যমকর্মীদের বহন করা ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে যমুনা, চ্যানেল একাত্তর, বৈশাখী টিভি, চ্যানেল আই, ডিবিসি টিভি ও ডেইলি স্টারের গাড়িসহ সাংবাদিক বহনকারী আট থেকে ১০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুত্র: আমাদের সময়

পাঠকের মতামত: